বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ সবুজ শস্যভূমির কথা বলতে গেলে যে ধানজাতটির নাম স্বতঃস্ফূর্তভাবে সামনে আসে, তার মধ্যে কালোজিরা চাল শীর্ষে থাকে। নামের সঙ্গে জিরে শব্দটি থাকলেও এটি কোনো মশলা নয়; বরং এক ধরনের সুরভিময় ধান, যার দানা ছোট, চিকন ও কোমল। দানার স্বকীয় রঙ, ঘ্রাণ ও স্বাদের জন্যই এটি অন্যান্য চাল থেকে এক বিশেষ পরিচিতি অর্জন করেছে।
বাংলার বহু গ্রামীণ এলাকায় কালোজিরা ধানকে “রাজার চাল”, “মহারাণীর চাল” বা “নবাবি চাল” নামেও ডাকা হয়। এর পেছনে রয়েছে এর আভিজাত্যপূর্ণ সুগন্ধ, উৎকৃষ্ট গুণমান এবং ঐতিহ্যবাহী উৎসবীয় রান্নার অপরিহার্যতা।
কালোজিরা চাল কত টাকা কেজি
দেশে বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যমূল্যের মতো কালোজিরা চালের দামও গত কয়েক বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, পরিবহন খরচ, শ্রমিকের মজুরি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যদ্রব্যের উত্থান-পতনের ফলে চালের দাম বাড়তে বাধ্য।
২০১৯–২০২০ সালে কালোজিরা চালের দাম ছিল ১২৫–১৩০ টাকা প্রতি কেজি।
পরবর্তীতে, বাজারে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি দেখা দিলে এ দামে পরিবর্তন আসে
কালোজিরা পোলাও চাল দাম কত
বাংলাদেশে পোলাও রান্নার জন্য প্রথমে যে চালের নাম উচ্চারিত হয়, তা হলো কালোজিরা চাল। এই চালের সৌন্দর্য, সুবাস এবং রন্ধনযোগ্য বৈশিষ্ট্য এতটাই সমৃদ্ধ যে এটি পোলাওকে শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, বরং এক বিশেষ অভিজ্ঞতায় রূপ দেয়। সাধারণভাবে ভালো মানের ১ কেজি কালোজিরা পোলাও চালের দাম ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে থাকে। তবে মৌসুমভেদে এই দাম কখনো বাড়তে বা কমতে পারে। কিছু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে মূল্য ২০০ টাকার কাছাকাছিও উঠে যেতে দেখা যায়।
শেষ কথা
কালোজিরা চাল শুধুমাত্র এক কেজি ধানের মূল্য নয়; এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য, শৈল্পিক রন্ধনপ্রক্রিয়া ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির গভীর নিদর্শন। এর ঘ্রাণ, দানা, ইতিহাস—সব মিলিয়ে এটি এমন এক খাদ্যসম্পদ যা সময়ের সাথে আরও মূল্যবান হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রতিটি পোলাও, প্রতিটি উৎসব, প্রতিটি পারিবারিক আয়োজনে কালোজিরা চালের উপস্থিতি খাবারকে শুধু সুস্বাদু করে না, বরং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এক ঐতিহ্যের বার্তা বহন করে।



